Writter : Jinia Dutta
সায়রা বানুকে মনে আছে? ষাটের আর সত্তরের দশকের অসংখ্য ছবির বিউটি কুইন? তাঁর গ্ল্যামার,সরলতা তৎকালীন "জংলি ",এপ্রিল ফুল ",পড়োসন","দূর কি আওয়াজ " ,"ভিক্টোরিয়া 203 " ইত্যাদি ছবিতে তার স্বাভাবিক অভিনয়,ড্রেস সেন্স আর দুর্দান্ত কমিক টাইমিং আপামর জনসাধারণের মনে ঝড় তুলে দিয়েছিল । কিন্তু আজকের লেখা সায়রাকে নিয়ে নয় । আজকের লেখাটি তাঁর জন্মদাত্রী রত্নগর্ভা মা নাসিম বানুকে নিয়ে । ছবিগুলো দেখে কি মনে হয়? বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর "তিলোত্তমা "র বর্ণনা নতুন ভাবে লিখতে বসতেন? পিকাসো নতুন করে মগ্ন হতেন সৃষ্টির উন্মাদনায়? নাকি রাজা রবি বর্মার আঁকা কোনো নিখুঁত তৈলচিত্র যা দেখে অন্তর হয়ে ওঠে এক অপূর্ব মাধুর্যে পরিপূর্ণ । কিছু কিছু মুখ আছে যারা কিনা আলঙ্কারিক বিশেষনের উর্দ্ধে । নাসিম ছিলেন ঠিক সেরকমই একজন । ছবিগুলো প্রমাণ যে আমি অত্যুক্তি করছিনা একটুও । শুধু রূপ নয় এমন শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ছিল তাঁর যে ডিরেক্টর প্রোডিউসর প্রত্যেকের কাছে তিনি ছিলেন নমস্যা। তাকে বলা হত "first female superstar".
জন্ম ৪ঠা জুলাই ১৯১৬| দীল্লীতে এক ধনী পরিবারে| বাবা ছিলেন হাসানপুরের নবাব আব্দুল ওয়াহিদ খান আর মা শমসাদ বেগম যিনি তৎকালীন সময়ে বিখ্যাত ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে| নাসিম বানু তখনকার মুসলিম সমাজের সেইসব আলোকপ্রাপ্তা বা enlightened মহিলাদের মধ্যে ছিলেন, যারা কিনা পর্দাপ্রথায় বিশ্বাষী ছিলেননা| তখনকার আধুনিকতা তো শুধু পোশাকে সীমাবদ্ধ ছিলনা, আধুনিকতা বলতে মনন,চিন্তন ,রুচিবোধ বা শিক্ষাকে বোঝাত। নাসিম ছিলেন প্রকৃত ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত আধুনিক মনস্ক একটি মেয়ে। পড়তেন কুইন্স মেরি কনভেন্টে রৌশেনারা নামে। লেখাপড়ায় তুখোড় নাসিমের মায়ের ইচ্ছা ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানানোর। কিন্তু নাসিম চাইতেন অভিনেত্রী হতে । গুণগ্রাহী ছিলেন অভিনেত্রী সুলোচনার (Ruby Mayers) . তখন অভিনেত্রী হতে চাওয়াকে খুব একটা ভালো চোখে দেখা হতনা| প্রাক স্বাধীনতার যুগে কোনো ধনী পরিবারের মেয়ে অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিতনা | একদা মুম্বাইতে তিনি চোখে পড়ে যান পরিচালক শোহরাব মোদীর| অফার পেলেন "হ্যামলেট " নাটকের 'অফিলিয়া' চরিত্রে । কিন্তু বাধ সাধল মায়ের আপত্তি । মেয়েকে অভিনয়ে নামাতে নারাজ তিনি । শেষ পর্যন্ত মেয়ের অনশন (hunger strike) আর জেদের কাছে হার স্বীকার না করে পারলেন না তিনি । কিন্তু এরপর বন্ধ হয়ে গেল নাসিমের পড়াশোনা । অভিনেত্রীদের যে স্কুলে কোনো জায়গা নেই ।
মুম্বইতে ফিরে তাঁর প্রথম কাজ শোহরাব মোদির "খুন কা খুন"(১৯৩৫) (Hamlet) ছবিতে । তারপর শোহরাব মোদির পরিচালনায় "খান বাহাদুর "(১৯৩৭), "তালাক "(১৯৩৮) , "মিঠা জহর"(১৯৩৮), "বসন্তি"(১৯৩৮) ইত্যাদি ছবিতে অভিনয়ের পর তাঁর প্রথম বড় ব্রেক হল শোহরাব মোদির মিনার্ভা মুভিটোনের "পুকার"(১৯৩৯) ছবিতে| মুঘল সম্রাজ্ঞী "নূরজাহান " এর চরিত্রে মনে হচ্ছিল যেন ইতিহাসের পাতা থেকে স্বয়ং জীবন্ত নূরজাহান উঠে এসেছেন। সংলাপ বলার দক্ষতা, রাজকীয় ব্যক্তিত্ব,মার্জিত রুচিবোধ তাকে রাতারাতি বানিয়ে দিল বলিউডের"beauty queen". ছবির প্রচারে ট্যাগলাইন ছিল - "পরী চেহরা" নাসিম বানু।(the fairy face) . গভীর দুটি বুদ্ধিদীপ্ত চোখ,দুধে আলতা রং, শিল্পীর হাতে গড়া চমত্কার নিখুঁত মুখমন্ডলী দেখলে দার্শনিক দেকার্তও বোধ করি পরীর কাল্পনিক ধারনার তত্ব নাকচ করে দিতেন। অভিনেত্রী দুর্গা খোটের কথায় ঈশ্বর যে শৈলীতে ওনাকে সৃষ্টি করেছেন,সৃষ্টির পর সেই শৈলীকে করে দিয়েছিলেন নষ্ট । অভিনেতা অশোক কুমার বলতেন তাঁর রূপের ছটায় ঘর হত আলোকিত ।
গানের গলাও ছিল তাঁর অপূর্ব । "পুকার" ছবিতে "জিন্দগী কা সাজভি ক্যায়া সাজ হ্যায়" গানটি হয় সুপারহিট । শোহরাব তাকে চুক্তি ভাঙতে দিতে চাননি। ইতিমধ্যে স্বামী এহসান উল হক (married 1937) এর সাথে বেশ কয়েকটি ছবি প্রোডাকশন এর কাজও করলেন নাসিম তাজমহল পিকচার্সে। "উজালা"(১৯৪২,) "অজীব লড়কি("১৯৪২), "চলরে নওজওয়ান"(১৯৪৪) ,"চাঁদনি রাত "(১৯৪৯) ইত্যাদি ছবিতে কাজ করলেও খুব বেশি চলেনি সেগুলো বক্স অফিসে । এহসান তাই ছবির নেগেটিভ নিয়ে পাড়ি দিলেন পাকিস্তানে । ছবি রিলিজ হল ওখানেও। ভারত পাকিস্তান বিভাজনের আগে নাসিম ছেলে সুলতান আহমেদ আর মেয়ে সায়রাকে নিয়ে থেকে গেলেন ভারতে।
১৯৫০ সালে মিনার্ভা পিকচারসে তিনি অভিনয় করেন শোহরাব মোদী পরিচালিত "শীষমহল" ছবিতে । পর্দায় একফোঁটা মেকআপ ছাড়া অতি সাধারণ সুতির শাড়ি পড়ে । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যাদুতে মুগ্ধ করলেন দর্শকদের । ১৯৪৮ সালে "অনোখি অদা" ছবিতে প্রেম আদিব আর সুরেন্দ্র এর বিপরীতে তাঁর অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে। ১৯৫১ তে সুরেশের বিপরীতে "শবিস্তান" ছবিতে দুই সন্তানের মা নাসিমকে দেখে মনে হচ্ছিল, বয়স মাথা নত করেছে এই দাপুটে নায়িকার কাছে। ৩০ এবং ৪০ এর দশকের প্রায় প্রত্যেকের সঙ্গেই কাজ করেছেন নাসিম| পৃথ্বীরাজ কপূর, চন্দ্রমোহন,সুরেশ,সুরেন্দ্র,অশোক কুমার,শ্যাম কুমার,রেহমান সবার সাথেই চূড়ান্তভাবে সফল তিনি| তারঁ
"বাঘী"(১৯৫৩) ,"সিন্দবাদ জাহাজী"(১৯৫২) ছবিগুলি সাফল্যের মুখ দেখেনি খুব একটা । ১৯৫৭ তে তিনি ছোটো একটি চরিত্রে অভিনয় করেন, "নওশেরওয়ানি আদিল" ছবিতে ।
"বাঘী"(১৯৫৩) ,"সিন্দবাদ জাহাজী"(১৯৫২) ছবিগুলি সাফল্যের মুখ দেখেনি খুব একটা । ১৯৫৭ তে তিনি ছোটো একটি চরিত্রে অভিনয় করেন, "নওশেরওয়ানি আদিল" ছবিতে ।
এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়েন তার মেয়ে সায়রাকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করতে । মায়ের মতোই স্বর্গীয় রূপের অধিকারীনি সায়রার নামের আগেও যুক্ত হল "beauty queen ". এছাড়া "জংলি "(১৯৬১) ,"এপ্রিল ফুল "(১৯৬৪), "শাগির্দ"(১৯৬৭) ,"সাজ অর আওয়াজ "(১৯৬৬) ছবিতে সায়রা বানুর সাদা,গোলাপি,তুঁতে রঙের উপর এম্ব্রয়ডারি,ফ্যাব্রিক কাজের শিফন শাড়ী আর সিল্কের চুড়িদার যা ৬০ এর দশকের মেয়েদের কাছে fashion statement ছিল, তার ডিজাইনার কিন্তু নাসিম বানুই| সায়রা বানু অসংখ্য বার স্বীকার করেছেন,যে তারঁ মা ছিলেন multitalented. তার জীবনে তারঁ মায়ের প্রভাব অপরীসিম| শৈশবে লন্ডনে পড়াশোনাতেই হোক বা দীলিপ কুমারকে তাঁর জীবনে নিয়ে আসা বা সিনেমায় সাফল্য, সবেতেই রয়েছে তাঁর মায়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ।
দীর্ঘদীন চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকার পর ২০০২ সালে ১৮ ই জুন মুম্বইতে শেষ নিশ্বাষ ত্যাগ করেন সৌন্দর্য এবং প্রতিভার মিশ্রন এই অভিনেত্রী| বয়সেও যে মানুষ সুন্দর থাকতে পারে,ব্যক্তিত্ব যে মানুষের সৌন্দর্য হাজারগুন বাড়িয়ে দেয়, তিনি ছিলেন তার জলন্ত দৃষ্টান্ত| দেবিকা রানী যদি ভারতীয় সিনেমার "ফার্স্ট লেডি" হন, নাসিম বানু ছিলেন "the magnanimous persona of Indian cinema". হয়ত এই "পরী চেহরা" এখন সসম্মানে পরীদের দেশেই বিরাজমান| রাজকীয় চরিত্রে অভিনয় করতেন,চলে গেলেন যেন রানির মতোই| সত্যি তিনি হিন্দী ছায়াছবির জগতের "নূরজাহান" | এই মহান প্রতিভাময়ী শিল্পীকে প্রনাম আমাদের বহু সমৃদ্ধশালী ছবি উপহার দেবার জন্য| তাঁর এই ম্যাজিক,প্রখর ব্যক্তিত্বের ছাপ এখনও অটুট| অনেক শ্রদ্ধা আর প্রনাম| RIP(angel) Naseem Banu. May your departed soul rest in peace
A neon sign
ReplyDeleteYou can find hollow glass tubes in 4 ft, 5 ft and 8 ft lengths to make neon lamps. The tubes are shaped by heating the glass with forced air or lit gas. Depending on the country and the supplier, different glass compositions are used. There are three types of soft glass: soda-lime or lead glass. The borosilicate glass family also has "Hard" glasses. The working temperature of glass varies depending on the composition. The temperature at which the propane gas is used to ignite the air-gas flame varies depending on its fuel. It can reach 3000°F.
More info
Display case lighting with LED light strips
ReplyDeleteWhile display cases are important in commercial settings, they can also be found in residential and industrial settings. Display cases are usually made from glass, but you can also get them made of wood or a mixture of metal and wood. LED light strips can be used to illuminate display cases so that items are highlighted.
LED lights are gaining popularity due to their cost efficiency and effectiveness in lighting your space or projects. They are lightweight and portable, as well as flexible and easy to set up. More people shop online for LED strip lighting than ever before. Everyone is looking for LED lighting ideas.
LED strips are by far the most popular of all LED lighting products. You can use it as a couch light, truck lighting, or for room decoration.
More info
Writing good blog comments requires skill and dedication. Comments form connections. Great! Great for sharing this with you. In my most recent profile, I wrote Spacebar Counter about profile. Spacebar Click Test Learn more about Spacebar Challenge.
ReplyDelete