হাইট ৬ ফিট । বর্ণ ফর্সা । তির্যক চাহনি । সুন্দর গড়ন । এবং হেব্বি স্মার্ট একটা লুক । সত্যজিৎ রায়ের স্কেচ অনুযায়ী এটাই প্রদোষ চন্দ্র মিত্র বা ফেলুদা ! এবং যাঁকে দেখে এই স্কেচ, তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । বাংলা চলচ্চিত্র জগতের আইকনিক অভিনেতাদের তালিকায় যিনি অন্যতম স্থানাধিকারী ।
সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত ছবি এবং সৌমিত্র সেখানে হিরো, এই কম্বোয় মুগ্ধ বাঙালি দর্শকের একাংশ ৷ সে জয় বাবা ফেলুনাথ, সোনার কেল্লা-ই হোক বা অরণ্যের দিনরাত্রি, অপুর সংসার থেকে চারুলতা, শাখা-প্রশাখা , সত্যজিৎ-সৌমিত্র জুটির জবাব নেই ! এমন একটি জুটি যা কিনা মিফুনে-কুরোসাওয়া, মাস্ত্রোয়ানি-ফেলিনি, ম্যাক্স ভন সিডাও-বার্গম্যানের মতো কিংবদন্তি জুটিগুলোর সমতুল্য ।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম কৃষ্ণনগরে, ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি । কলকাতার সিটি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর হন। তারপর অল ইন্ডিয়া রেডিওয় কাজ করেছেন কিছুদিন । কবিতাও লিখতেন সেসময়। নিজের সম্পাদনায় এখন লিটল ম্যাগাজ়িনের প্রচ্ছদ আঁকার অনুরোধ নিয়ে সৌমিত্র গিয়েছিলেন সত্যজিতের কাছে ৷ সত্যজিৎ তাঁকে ফিরিয়ে তো দেনইনি, উপরন্তু লাগাতার ম্যাগাজ়িনের প্রচ্ছদ এঁকে গিয়েছিলেন, সৌমিত্র সম্পাদনার কাজ ছেড়ে দেওয়ার পরও ৷ ১৯৫৯ সালে সত্যজিতের হাত ধরেই সিনেমার জগতে পা রাখেন সৌমিত্র ৷ ছবির নাম অপুর সংসার ৷ তখন রেডিও অ্যানাউন্সারের পাশাপাশি বাংলা নাট্যমঞ্চে ছোটোখাটো ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন তিনি ৷ অপুর সংসার সে অর্থে সৌমিত্রর বড় ব্রেক ৷ এর পর সত্যজিতেরই চোদ্দোটি ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৷ সত্যজিতের ছবিগুলোয় সৌমিত্রর বিপরীতে বেশিরভাগ সময়েই দেখা গিয়েছে শর্মিলা ঠাকুরকে, অপুর সংসার থেকেই । উত্তম-সুচিত্রার মতো চির রোম্যান্টিক না হলেও, সৌমিত্র-শর্মিলার জুটির একটা ক্লাসিক আইডেন্টিটি ছিল...
একথা সত্যি যে মানিকদার বেশির ভাগ গল্প এবং চিত্রনাট্য সৌমিত্রকে দেখেই তিনি লিখেছিলেন (আগেই বলেছি ফেলুদার কথা)। সৌমিত্রর জন্য সত্যজিতের চরিত্রগুলোও ছিল একে অপরের থেকে একেবারেই ভিন্ন ৷ সেই সব চরিত্রগুলোকে সৌমিত্র সম্পূর্ণ নিপুণতার সঙ্গে রুপোলি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন ৷
সত্যজিতের বাইরেও মৃণাল সেন, তপন সিংহর মতো পরিচালকদের সঙ্গে ছবি করেছেন সৌমিত্র ৷ মৃণালে সেনের আকাশকুসুম ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকের মনে বিশেষ দাগ কেটেছিল ৷ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের তিন ভুবনের পারে ছবিতে সৌমিত্র-তনুজার মিষ্টি কেমিস্ট্রি মনে রাখার মতো । সেই ছবিরই কে তুমি নন্দিনী গানটির সঙ্গে বাঙালির আত্মীক যোগও আছে খানিক অর্ধেক । তপন সিংহর ঝিন্দের বন্দি ছবিতে সৌমিত্রকে নামানো হয় উত্তম কুমারের বিপরীতে ৷ সে এক মারমার কাটকাট ব্যাপার ! কাকে ছেড়ে দর্শক কাকে দেখবে ! উত্তরকুমার তখন বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্য গগনে সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা । এদিকে সৌমিত্ররও পাল্লা কিছু কম ভারী নয় । সেখানেও জোর যথেষ্ট । তবে সৌমিত্র না উত্তম, কে বেশি বড়, এই নিয়ে বিতর্ক তখনও ছিল, এখনও আছে । সিদ্ধান্ত এখনও পেন্ডিং ।
রুপোলি পর্দার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাট্যমঞ্চেও প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন সৌমিত্র। আবৃত্তির জনপ্রিয়তা এখনও তুঙ্গে ৷ অভিনয়ও করছেন জোর কদমে ৷ লিভিং লেজেন্ড বোধ হয় একেই বলে ! তাঁর পুরস্কার ও সম্মানের লিস্টও নেহাত কম নয় । ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অফিসার অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস-এ ভূষিত হয়েছেন সৌমিত্র। ইতালি তাঁকে দিয়েছে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্টের পুরস্কার। ভারতের পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়ে বাঙালির মুখ উজ্জ্বল করেছেন ।
সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত ছবি এবং সৌমিত্র সেখানে হিরো, এই কম্বোয় মুগ্ধ বাঙালি দর্শকের একাংশ ৷ সে জয় বাবা ফেলুনাথ, সোনার কেল্লা-ই হোক বা অরণ্যের দিনরাত্রি, অপুর সংসার থেকে চারুলতা, শাখা-প্রশাখা , সত্যজিৎ-সৌমিত্র জুটির জবাব নেই ! এমন একটি জুটি যা কিনা মিফুনে-কুরোসাওয়া, মাস্ত্রোয়ানি-ফেলিনি, ম্যাক্স ভন সিডাও-বার্গম্যানের মতো কিংবদন্তি জুটিগুলোর সমতুল্য ।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম কৃষ্ণনগরে, ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি । কলকাতার সিটি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর হন। তারপর অল ইন্ডিয়া রেডিওয় কাজ করেছেন কিছুদিন । কবিতাও লিখতেন সেসময়। নিজের সম্পাদনায় এখন লিটল ম্যাগাজ়িনের প্রচ্ছদ আঁকার অনুরোধ নিয়ে সৌমিত্র গিয়েছিলেন সত্যজিতের কাছে ৷ সত্যজিৎ তাঁকে ফিরিয়ে তো দেনইনি, উপরন্তু লাগাতার ম্যাগাজ়িনের প্রচ্ছদ এঁকে গিয়েছিলেন, সৌমিত্র সম্পাদনার কাজ ছেড়ে দেওয়ার পরও ৷ ১৯৫৯ সালে সত্যজিতের হাত ধরেই সিনেমার জগতে পা রাখেন সৌমিত্র ৷ ছবির নাম অপুর সংসার ৷ তখন রেডিও অ্যানাউন্সারের পাশাপাশি বাংলা নাট্যমঞ্চে ছোটোখাটো ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন তিনি ৷ অপুর সংসার সে অর্থে সৌমিত্রর বড় ব্রেক ৷ এর পর সত্যজিতেরই চোদ্দোটি ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৷ সত্যজিতের ছবিগুলোয় সৌমিত্রর বিপরীতে বেশিরভাগ সময়েই দেখা গিয়েছে শর্মিলা ঠাকুরকে, অপুর সংসার থেকেই । উত্তম-সুচিত্রার মতো চির রোম্যান্টিক না হলেও, সৌমিত্র-শর্মিলার জুটির একটা ক্লাসিক আইডেন্টিটি ছিল...
একথা সত্যি যে মানিকদার বেশির ভাগ গল্প এবং চিত্রনাট্য সৌমিত্রকে দেখেই তিনি লিখেছিলেন (আগেই বলেছি ফেলুদার কথা)। সৌমিত্রর জন্য সত্যজিতের চরিত্রগুলোও ছিল একে অপরের থেকে একেবারেই ভিন্ন ৷ সেই সব চরিত্রগুলোকে সৌমিত্র সম্পূর্ণ নিপুণতার সঙ্গে রুপোলি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন ৷
সত্যজিতের বাইরেও মৃণাল সেন, তপন সিংহর মতো পরিচালকদের সঙ্গে ছবি করেছেন সৌমিত্র ৷ মৃণালে সেনের আকাশকুসুম ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকের মনে বিশেষ দাগ কেটেছিল ৷ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের তিন ভুবনের পারে ছবিতে সৌমিত্র-তনুজার মিষ্টি কেমিস্ট্রি মনে রাখার মতো । সেই ছবিরই কে তুমি নন্দিনী গানটির সঙ্গে বাঙালির আত্মীক যোগও আছে খানিক অর্ধেক । তপন সিংহর ঝিন্দের বন্দি ছবিতে সৌমিত্রকে নামানো হয় উত্তম কুমারের বিপরীতে ৷ সে এক মারমার কাটকাট ব্যাপার ! কাকে ছেড়ে দর্শক কাকে দেখবে ! উত্তরকুমার তখন বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্য গগনে সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা । এদিকে সৌমিত্ররও পাল্লা কিছু কম ভারী নয় । সেখানেও জোর যথেষ্ট । তবে সৌমিত্র না উত্তম, কে বেশি বড়, এই নিয়ে বিতর্ক তখনও ছিল, এখনও আছে । সিদ্ধান্ত এখনও পেন্ডিং ।
রুপোলি পর্দার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাট্যমঞ্চেও প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন সৌমিত্র। আবৃত্তির জনপ্রিয়তা এখনও তুঙ্গে ৷ অভিনয়ও করছেন জোর কদমে ৷ লিভিং লেজেন্ড বোধ হয় একেই বলে ! তাঁর পুরস্কার ও সম্মানের লিস্টও নেহাত কম নয় । ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অফিসার অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস-এ ভূষিত হয়েছেন সৌমিত্র। ইতালি তাঁকে দিয়েছে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্টের পুরস্কার। ভারতের পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়ে বাঙালির মুখ উজ্জ্বল করেছেন ।
0 comments:
Post a Comment
Thanks you Visit Awesome Raja.
www.awesomeraja.ml
classicalsujon@gmail.com