(১) সাংবিধানিক যুক্তিঃ- সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে ১১ নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সমূহের ৩ নং অংশে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র । সাংবিধানিক ধারা ২৯ (১) অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগের সমতা থাকিবে। যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে। মানবতার মর্যাদা ও মূল্যেবোধের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে । এই ভাগের ১৯ নং অনুচ্ছেদে আরো বলা হয়েছে- ১ (ক) সকল নাগরিকের জন্যে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবে । ১ (খ) প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সমান সুযোগ সুবিধা দান নিশ্চিত করিবার জন্যে রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন । (২) গড় বয়স অনুযায়ী চাকরির বয়সঃ- বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হলেও এখন শিক্ষার হার অনেকগুনে বেড়েছে । জাতীয় আয় বেড়ে ১৭৫২ মার্কিন ডলারে উন্নিত হয়েছে । গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছর হয়েছে । সেই হিসেবে চাকরিতে প্রবেশের বয়স হওয়ার কথা ৪৩ বছর । (৩) শিক্ষা ব্যবস্থা বিবেচনা করলে চাকরির বয়স বাড়ানো যুক্তিযুক্তঃ- বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন যে, অনার্স ও মাস্টার্স এবং ডিগ্রি অর্জন করতে গেলে শিক্ষার্থীর বয়স ২৭ - ২৮ বছরে চলে যায় । বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থা বিবেচনা করা হলেও যারা তাদের সার্টিফিকেট অর্জনে শ্রম, সময় সব কিছুর ব্যয় করেছেন । তারা কি তাহলে আবেদনের সুযোগ পাবে না? নাকি বয়সের ফ্রেমে বেঁধে দিয়ে নতুনদের আগমনের জন্যে তাদের অযোগ্য বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলবে? এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের তো কোন দোষ নেই । তবে এর জবাব কে দিতে পারবেন? চলে আসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও মন্ত্রী পরিষদ দিবেন? নাকি সরকার প্রধান দিবেন? (৪) বিশ্বের অন্যান্য স্বাধীন দেশ সমূহে চাকরির বয়সঃ- বিশ্বের ১৯৫ টি স্বাধীন দেশের মধ্যে ১৬২ টি দেশেই চাকরির আবেদনের বয়স সর্বনিম্ম ৩৫ থেকে ৫৯ বছর । বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে কেন শিক্ষার্থীদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হবে? মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি পারেনা এ বিষয়ে যুক্তি প্রদান করতে? পারেন না সমগ্র বিশ্বে উন্নয়ন ও অধিকারের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের জনগনের অধিকার রক্ষার্থে মতামত প্রকাশ করতে ! (৫) অবসরের সময়সীমার সাথে চাকরির আবেদনের বয়স সীমার বৈষম্যঃ- অবসরের বয়স বৃদ্ধিতে ৫ বছর পিছিয়ে পড়েছি আমরা । কারণ এ দেশে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা থেকে শুরু করে সম্পন্ন করতে ২ থেকে ৪ বছর সময় লেগে যায় । যা সবার যোগ্যতা থাকা সত্বেও চাকরি পায়না অনেক শিক্ষার্থী । সংবিধানের কর্মবিভাগ অনুযায়ী ১৩৪ নং ধারায় কর্মমেয়াদ অনুযায়ী এই সংবিধানের দ্বারা অন্যরকম বিধান না করা হইয়া থাকিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির সন্তোষ্টানুযাযী সময়সীমা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন । এ তথ্যানুযাযী কি তাহলে রাষ্ট্রপতি ও সরকার চাকরিতে অবসর এর বয়স বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করেন? যদি তাই হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয় বিবেচনা না করে, শুধু এ ধারায় চললে দেশে গণতন্ত্রের কোন বহিঃ প্রকাশ আমরা খোঁজে পাবোনা । চাকরীর আবেদনের বিষয়টি যদি অবসরের বিষয়ের সাথে বিবেচনা না করা হয়, তাহলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ছাত্র সমাজ? (৬) রাজনৈতিক অবস্থার অবনতিতে বাঁধা ছাত্র সমাজঃ- যারা ছাত্র রাজনীতি করে তাদের অবস্থা এমন যে, সবাই সফল হওয়া সম্ভব হয় না। ছাত্র রাজনীতির বয়সসীমা ২৪ বছর । তাহলে যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন ২৮-২৯ বছর। তাহলে এ সময়কার যে খরচ হয়। তা কেন দিবেন না সরকার? বিভিন্ন দেশীয় ও বৈদেশিক সংস্থা কর্তৃক যেমন বিবেচনায় পড়ে জাতিসংঘ কর্তৃক শিক্ষা ক্ষেত্রে অনুদান দেয় । ফলে ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট বাঁড়ানো হয়েছে । তাহলে সেই সাথে যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সরকার কেন তা প্রমাণের সময় সুযোগ দিবেন না? (৭) পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে দেখা যায় আবেদনের বয়স বাঁড়ানো উচিতঃ- সাধারণ জনগণ চায় বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবশের বযস বাঁড়ানো হউক । কারণ শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির ফলে প্রত্যেক পরিবারেরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে । তাছাড়া আমাদের সমাজে অধিকাংশ শিক্ষার্থী হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের । যাদের অনেকেই টিউশনীসহ বিভিন্ন কাজ করে পড়ালেখা সম্পন্ন করে । যা সময় সাপেক্ষের একটি বিষয় । শিক্ষিত করার পেছনে পরিবার বর্গের অনেক খরচ ও সময় তাদের দিতে হয় । এছাড়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই আদেন যারা এমন নয় যে কোন সচ্চল পরিবারের । পড়ার খরচ চালানো ও নিজেদের জ্ঞান অর্ঝনের জন্য প্রতিযোগিতায় নামতে অনার্স মাস্টার্স নামক সার্টিফিকেট অর্জনের পাশাপাশি টিউশনী ও ছোট খাট চাকরি করতে হয় । তাহলে তাদের এই সাধনা কেন বয়সের ফ্রেমে বেঁধে দেওয়া হয় । কেন আরেক সময় সুযোগ দেওয়া হবে না যোগ্যতা প্রমাণের ওরা তো এদেশেরই সন্তান । (৮) জাতীয় যুবনীতি ও উন্নয়নশীল দেশঃ- জাতীয় যুবনীতি অনুযায়ী বয়সসীমা ২৮ থেকে ৩৫। তাছাড়া বাংলাদেশ এমন উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছেন । তাহলে শিক্ষার্থীরা কেন তাদের চাকরীতে আবেদনের এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে । জাতীয় উন্নয়নে যেখানে তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি । (৯) উন্নত বিশ্বের ধারণাঃ- উন্নত দেশ সমূহের সাথে তাল মিলাতে মেধা ও যোগ্যতাকে বয়সের দ্বারা নির্ধারণ করা অযোক্তিক । বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে সন্তানদের বোধ ও মেধার অবমূল্যায়ন রোধ করতে চাকরিতে প্রবেশে আবেদনের বয়স বৃদ্ধির প্রয়োজন । না হয় পরবর্তী প্রজন্ম মেধা পাচারের উদাসিনতা পরিলক্ষিত হবে । (১০) মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ প্রকল্পঃ- একজন চাকরি পাবেন কি পাবেন না, সেটা নিয়োগ পরক্ষিায় নির্ধারিত হবে । কিন্তু সবাই আবেদন করার অধিকার রাখে । যেখানে বর্তমান সময়ে চাকরির আবেদনের বয়স হওয়া উচিত ৪২ থেকে ৪৩ বছর । সেখানে কেন চাকরির বয়সসীমা ৩৫ এ উন্নতি করা সম্ভব হবে না ? যদি তা উপেক্ষা করা হয় । তাহলে তা মানবাধিকার লক্ষণ ছাড়া কিছুই নয় । এসব বিষয় বিভিন্ন মন্ত্রী পরিষদের এবং দূর্নীতি দমন কমিশনের আওতায়
Kumrun Nahar
0 comments:
Post a Comment
Thanks you Visit Awesome Raja.
www.awesomeraja.ml
classicalsujon@gmail.com